আপনি কি সত্যি গরীব নাকি আপনার
পিছিয়ে পড়া মানসিকতা গরীব বানিয়েছে আপনাকে?
জ্যোতিষ শাস্ত্রে একটা শ্লোক আছে যেটা পরাশর মুনী বলেছিলেন, যার বাংলার অর্থ হচ্ছে ” শনি, রবি, শুক্র” একসাথে যেখানে, সাগর শুকিয়ে যায় সেখানে। তারমানে হলো আপনার জন্ম কুষ্টিতে এইযোগ থাকলে আপনি গরীব হবেন। আপনি যেখানেই যাবেন দুর্ভাগ্য আপনার পিছু ধাওয়া করবে এবং অসফলতার চরম শিখরে নিয়ে যাবে।
ইতিহাস সাক্ষী আছে মানুষের অদম্য ইচ্ছে শক্তির কাছে ভগবান হার মেনেছে, বার বার প্রমান হয়েছে এমন কিছু উদাহরণ আমাদের কাছে আছে। সম্প্রতি ফুটবল প্রেমিকরা হয়তো জানেন “লিওনেন মেসি” জন্মের পরে অনেক বছর পর্যন্ত পোলিও রোগে ভুগেছিলেন। সেই ছেলেটাই তিনবার বিশ্বসেরা ফুটবলার হয়েছেন।
আমি এমন একজনের কুষ্টি নিয়ে বলতে চলেছি যার জন্ম লগ্নে এই যোগ আছে কিন্তু অতি গরীব পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও ভাগ্যকে বদলে দেবার ক্ষমতা ছিল তার মোনে।
১৮৫৭ সালের ১১ ফেব্রয়ারি আমেরিকার ওহিও রাজ্যের মিলান শহরে জন্মগ্রহণ করেন টমাস আলভা এডিসন। ছোট থেকেই অন্ধুসন্ধিৎসু মন থাকলেও বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ফ্যারাডের মতো তিনিও অংকে নিতান্ত কাঁচা ছিলেন। বাবা চাইতেন ছেলে সাহিত্যিক হোক। তাই সে কালের বিভিন্ন রুচিশীল সাহিত্যের বই তিনি নিয়মিত ছেলের জন্য নিয়ে আসতেন। অতটুকু ছেলের সঙ্গে সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করতেন। তবে এডিসনের সব চেয়ে ভালো লাগার বিষয় ছিল বিজ্ঞান, বিশেষ করে রসায়ন। ছোটবেলাতেই নিজে নিজে একটি ল্যাবরেটরিও তৈরি করেছিলেন। পিতার কাছ থেকে এডিসন যা হাতখরচ পেতেন তাতে তাঁর ল্যাবরেটরির খরচ জোগানো কঠিন হয়ে যেত, তাই তিনি শুরু করলেন ফেরি করা। ট্রেনে ফেরি করে তিনি বাদাম, চকলেট ইত্যাদি বিক্রি করতেন। পরে শুরু করেন সংবাদপত্র বিক্রি করা। সমসাময়িক সময়ে আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ চলছিল। খবরের চাহিদা বেশি হওয়ায় নিজেই একটি পত্রিকা প্রকাশ করা শুরু করলেন। নাম দিলেন হেরাল্ড। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে তিনি এই কাজ শুরু করেন। অনেক টাকা লাভ হলেও এডিসনের হাত প্রায়ই খালি থাকত। ল্যাবরেটরিতে গবেষণা ও বই কেনার পিছনেই তাঁর বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যেত। রেলে খবরের কাগজ বিক্রি করতে গিয়ে তিনি দেখলেন একটি খালি কামরা অব্যবহৃত পড়ে আছে। তখন সেটাকেই তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নিজের ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর করলেন। এখানে কাজ করতে করতেই তিনি বিদ্যুৎ শক্তি সম্পর্কে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেন। বিদ্যুৎ সম্পর্কে কৌতুহল তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায়।
এডিসন এর বয়স যখন 67 হটাৎ একদিন তার ল্যাবরেটরীতে আগুন লেগে যায়, তার জীবনের সমস্ত কিছু তার চোখের সামনে পুড়ে ছাই হতে দেখছিলেন আলভা, তার পাশে তার 24 বছরের ছেলে দাঁড়িয়ে ছিলো। ছেলেকে বললেন তোমার মাকে ডেকে আনো, দেখাও কত ভয়ঙ্কর আগুন জ্বলছে, এমন আগুন সচড়াচর দেখা যায়না। তার ছেলে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কষ্ট হচ্ছে না, আপনার সারাজীবনের পরিশ্রমের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে? উনি বলেন আবার সৃষ্টি করবে নতুন করে, আমাদের নিশ্চই কিছু ভুল ছিলো তার জন্য আগুন লেগে পুড়ে গেলো সব কিছু।
ঠিক 7দিন পর থেকেই 67বছরের বুড়ো আলভা আবার শুরু করেছিলেন সব কিছু, 3বছর লেগেছিল সব পুন নির্বাণ করতে।
আমাদের জন্ম কুষ্টিতে অনেক ভালো যোগ আবার অনেক খারাপ যোগ থাকতে পারে, কোনো খারাপ যোগের কথা চিন্তা করে যদি আমরা ভয় পেয়ে গুটিয়ে থাকি তাহলে ভাগ্য আমাদের প্রসন্ন কোনোদিন হবেনা।
জ্যোতিষীরা আপনাকে পথ দেখাবে কিন্তু আপনাদের মানসিক শক্তি আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সম্রাট বোস
7890023700