নেতাজি


আমি সম্রাট বলছি থুড়ি আমি সুভাষ বলছি।

৩রা জানুয়ারী সন্ধ্যা বেলা একজনের ফোন এলো, প্রতিদিনের মতন অনেক কথা হচ্ছিল অস্ট্রোলজি নিয়ে আমাদের মধ্যে

সে: সম্রাট তোমার কি রাহু আর বুধের কম্বিনেশন আছে কুন্ডলীতে?
আমি: কেনো বলুন তো?
সে: বলোই না
আমি: কেনো বললেন হটাৎ এমন কথা?
সে: না না সেটা নয়, আসলে সম্রাট দা আপনি একটু বেশী ইমোশনাল কথা বলেন তাই জন্য জিগ্গেস করেছিলাম।
উনি ঠিক বলেছিলেন আমাকে, আমি অতিরিক্ত ইমোশনাল।

আমি কিছু জ্ঞানী মানুষকে বলতে শুনেছি, রাহু আর বুধের কম্বিনেশন মানুষকে কিছুটা ভুল ভাল কথা বলতে বাধ্য করে, আবার অনেকেই বলে থাকেন এইসকল মানুষ নেশা গ্রস্থ হয়ে পড়েন। খুব ভালো কথা, ভুল ভাল কথা বলার মনে কি?
ভুল কথা সেটাই মনে হবে যেটা আপনি শুনতে পছন্দ করবেন না অথবা সমাজের ক্ষেত্রে সেটা শোভনীয় নয়, কি বলেন পাঠকগণ, তাই তো?

আবার অনেক তার্কিক জ্যোতিষ আমার এই শুধু রাহু আর বুধের কোথায় রেগে যেতে পারেন, তাই তাদের জন্য বলে রাখি ২য় পতির অবস্থান আর ২য় ভাব পীড়িত হয়েছে কিনা দেখে নেওয়া প্রয়োজন আছে।

উদাহরণ:

১, ভারতীয় রাজনৈতিক পার্টির একটি দলের কথা অন্য দল বলেন সব ভুল, কোনোটাই ঠিক নয়।

২, ভারত যা যা বলে, পাকিস্তান বলে ভুল বকছে ভারত।

৩, পাকিস্তান যা যা বলে ভারতবাসী বলে সব ভুল কথা।

৪, লাদেনের কথা আমেরিকার কাছে ভুল,
৫, আমেরিকার কথা লাদেনের কাছে ভুল।

আসল কথা হলো, যেটা অপনার পছন্দ হবেনা সেটাই ভুল মনে হবে।

আচ্ছা রাহু আর বুধের কম্বিনেশন যদি ভুল ভাল বকে থাকে তাহলে ছবিতে যেই কুন্ডলী দেওয়া আছে “নেতাজির” ওনার রাহু আর বুধের কম্বিনেশন ছিল,

“তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো”,এই কথাটা কি ভুল ছিল?

আপনারা বাঙালী হয়ে বা ভারতবাসী হয়ে কেউ একটিবারের জন্য বলতে পারবেন ওনার উক্তি ভুল ছিল?
কিন্তু ওনাকে ভুল প্রমাণিত করা হয়েছিল, কারা বা কেন করেছিল আজ কোনো বাঙালীর অজানা নেই। গান্ধীজী, নেহেরুর নীতি আদর্শ নেতাজীর থেকে একদম আলাদা থাকায় দুজনের মধ্যে দুরত্ব।

নেতাজির জীবনরহস্যের চেয়ে অধিক তাৎপর্যপূর্ণ কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক জীবন। তাঁর আড়াই দশকের রাজনৈতিক জীবন বাঙালিকে সাত দশক আচ্ছন্ন করে রেখেছে। বাঙালির কাছে গাঁধী বা নেহরু কখনও সে ভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেননি বহুলাংশে সুভাষচন্দ্রের খাতিরেই। নানা রংবেরঙের কল্পনা সাজিয়ে বাঙালি তৈরি করেছে গাঁধী-সুভাষ, নেহরু-সুভাষ দ্বৈরথের কাহিনি। সেই -সব আশ্চর্য গল্পে বাঙালি মধ্যবিত্তের ড্রয়িং রুম আলোড়িত হয়েছে। গাঁধী বলেছেন, ‘সীতারামাইয়ার পরাজয় আমার পরাজয়’—এইসকল কথা শুনে বাঙ্গালী শুনে বড়ো হয়েছে। ১৯৩৯-৪০ কালপর্বে যখন গাঁধী-সুভাষ সম্পর্ক তলানিতে, রবীন্দ্রনাথ মধ্যস্থতার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। গাঁধী এক লাইনের টেলিগ্রাম পাঠান— ‘Tell Subhas to submit to discipline’.
নেতাজি দ্বিতীয় বার সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় গাঁধী ওয়ার্কিং কমিটি থেকে সবাইকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন। সুভাষচন্দ্রকে অনুরোধ করেছিলেন নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে নতুন ওয়ার্কিং কমিটি তৈরি করতে।

আসলে কি জানেন?
রাহু আর বুধ কম্বিনেশন সাহসী কথা বলতে সাহায্য করে, যেভাবে নেতাজী বলতে পেরেছিলেন ” তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো”। হয়তো শুনতে মনের মতন নাও হতে পারে সকলের, কিন্তু কথার মধ্যে জোর থাকে।
আজকের দিনে ভারতের অন্য রাজ্যে নেতাজীকে নিয়ে তেমন কোনো মাতামাতি নাহলেও বাঙালীর মনে বা আমার মনে ওমর হয়ে থাকবেন।

শুভ জন্মদিন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু

ইতি
সম্রাট বসু