বার বার মনে হতো কেউ খুন করতে আসছে পারভীন ববিকে।
কিন্তু কেনো?
যে ভালোবাসার ক্ষয় নেই, তার কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল বলিউডের তারকা পরিচালক মহেশ ভাটের কাছে। তিনি জানিয়েছেন একসময়ের হট তারকা পারভিন ববির সঙ্গে তার অনন্ত ভালোবাসার কথা। স্ত্রী-সন্তান থাকতেও তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন ববির ভালোবাসায়। সেই লাভস্টোরির চৌম্বক ও ভয়ংকর কিছু সময়ের কথা জেনে নিন এখানে।
বলিউডে বহু লাভস্টোরি তৈরি হয়েছে। অনেকের ভালোবাসা মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু পারভিন ববি ও মহেশ ভাটের প্রেমকাহিনী মানুষ চরম যাতনা আর অশ্রু বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মনে ঠাঁই পেয়েছে। সবার হৃদয় ভেঙে দিয়ে চলে গেছেন একসময়ের দারুণ জনপ্রিয় ও আইকনিক এই তারকা।
১৯৭৭ সালের দিকে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে ববি। তখনই চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পারভিন। মহেশ বিবাহিত হলেও তৎকালীন সুপারস্টারের প্রেমে মজে গেলেন। তখন ববি ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’ এবং ‘কালা পাথর’ ছবির শুটিং করছেন। শুটিং শেষে বাড়ি ফিরে পারভিন এক সাধারণ নারী যিনি মহেশের প্রেমে পাগল।
১৯৭৯ সালের এক বিকেলে মহেশ জীবনের সবচেয়ে বড় সত্যের মুখোমুখি হলেন। দেখলেন, পারভিন সিনেম্যাটিক পোশাক পরে একটি ধারালো চাকু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মহেশকে দেখেই তিনি ফিসফিস করে বললেন, ‘কথা বলো না! এখানে অনেক শত্রু আছে। এরা সবাই আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে’। এমন ঘটনা প্রায়ই ভিন্ন ভিন্ন চেষ্টায় ঘটতে শুরু করলো। খুব শিগগিরই পারভিনের সবচেয়ে মারাত্মক মানসিক ভারসাম্যহীনতার সমস্যা ধরা পড়ল। তিনি প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত।
সে সময় বহু চিকিৎসক ও মহেশের বন্ধুরা পরামর্শ দিলেন যে, ববিকে সুস্থ করতে হলে ইলেকট্রিক শক দিতে হবে। কিন্তু এমন অমানবিক চিকিৎসায় রাজি হলেন না প্রেমিক। তিনি পাহাড়ের ছায়া নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন ববির পাশে। কবির বেদি তখন ববির সাবেক প্রেমিক। তিনি আমেরিকায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিলেন। ববির আরেক সাবেক প্রেমিক ও প্রতিবেশী ড্যানি ডেংজংপাও এগিয়ে এলেন। এরা সবাই পারভিন ও মহেশের পাশে দাঁড়ালেন আন্তরিকভাবে।
মানসিকভাবে পুরোই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ববি। তার শুধু মনে হতো, কেউ তাকে খুন করতে চায়। বাড়ির এসির মধ্যেও তিনি খুনির সন্ধান পেলেন। গাড়িতে উঠলে মনে হতো, বোমা রাখা হয়েছে এবং তার ঘড়ির আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পেতেন তিনি। তার মনে হতো, অমিতাভ বচ্চন তাকে খুন করতে চান। এই মহাতারকার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি করেছিলেন ববি। ক্রমেই কল্পিত খুনিদের হাত থেকে বাঁচতে সবার চোখের আড়াল হতে থাকলেন।
তাকে সুস্থ করার একমাত্র উপায় ছিল ইলেকট্রিক থেরাপি। তবুও এমন চিকিৎসা মেনে নিতে পারছিলেন না মহেশ ভাট। কিন্তু চরম পর্যায়ে পৌঁছলেন পারভিন। তাকে আর নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। ওষুধ বা খাবার খেতেন না। খাওয়ার আগে মহেশকে তা খেতে হতো। ববির মনে হতো, ওতে বিষ মেশানো রয়েছে। মহেশ আগে খেয়ে ববিকে বোঝাতেন, এতে বিষ নেই। এভাবে তাকে ওষুধ খাওয়াতেন মহেশ।
ব্যাঙ্গালোরে পারভিন সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতেন মহেশ। কিন্তু একটা সময় ববির মনোচিকিৎসক মহেশকে দূরে থাকার পরামর্শ দিলেন। আগের স্ত্রী লরেনের কাছে ফিরে এলেন মহেশ। এ সময়ই মহেশ লিখলেন ‘আর্থ’। ছবিটি নির্মিত হয় তার নিজের জীবনের গল্প নিয়ে।
একটা সময় পারভিন চিকিৎসার মাঝপথে ফিরে আসলেন ব্যাঙ্গালোরের বাড়িতে। মহেশ ছুটে এলেন তার কাছে। দুজনই দুজনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হলেন। একটা মুহূর্তে ববি শর্ত জুড়ে দিলেন মহেশকে। বললেন, হয় আমাকে অথবা আমার মনোচিকিৎসককে বেছে নিতে হবে। মহেশ বুঝলেন, এটাই হয়তো ববি ও তার সম্পর্কের শেষ মুহূর্ত। মহেশ মাঝরাতে বাঙলো থেকে বের হলেন। পারভিন পাগলের ছুটতে থাকলেন মহেশের পিছু পিছু। ববি ছিলেন নগ্ন! ববির জীবন থেকে পুরোপুরি হারিয়ে গেলেন মহেশ।
২০০৫ ২০ january পারভিনের মৃত্যুর খবরে ভেসে গেলেন মহেশ। ববির মৃতদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার কেউ ছিলেন না। ছুটে এলেন মহেশ ভাট। নিজ দায়িত্বে কাজটি করলেন। ববিকে কখনো ভুলতে পারবেন না মহেশ। তার নির্মিত ‘আর্থ’ এবং ‘ও লামহে’ ছবি পারভিন এবং তাদের অমর প্রেমের স্মৃতি বহন করছে।
mental illness:
———————–
কিছু মানুষ জন্মগত মানসিক ভারসাম্যহীন আবার কখনও দেখা যায় বয়সের একটা জায়গায় এসে মানুষের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতা খুঁজে পাওয়া যায়।
জেনে নিই আমরা মেন্টাল ইলনেস কখন দেখা যায়।
১, বৃহস্পতি লগ্নে এবং মঙ্গল ৭মে।
২, মঙ্গল লগ্নে এবং বৃহস্পতি ৭মে।
৩, শনি লগ্নে এবং মঙ্গল ৫,৭,৯ স্থানে।
৪, শনি ১২শে এবং দুর্বল চন্দ্র যুক্ত।
৫, শনি লগ্নে এবং ১২শে রবি আর চন্দ্র আর মঙ্গল ত্রিকোণ স্থানে অবস্থান।
৬, বৃহস্পতি দুর্বল ।
৭, লগ্ন পীড়িত, কারণ লগ্নকে আমরা মাথা বিচার করে থাকি।
৮, Afflictions to the Moon (mind),
Mercury (nervous system) and
Jupiter (maturity / wisdom). Particularly,
যখন এই তিনটি গ্রহ ভীষণ ভাবে পীড়িত হয়ে যায় তখন mental illness are highly possible.
Case Study:
——————–
——————–
ছবিতে দেওয়া জন্ম কুন্ডলীতে পাঠকগণ দেখতে পারবেন ১,চন্দ্র (mind)রাহু এবং শনি দ্বারা পীড়িত আর নীচস্ত বৃহস্পতি দ্বারা দৃষ্ট।
২, বুধ (nervous system)দগ্ধ আর নীচস্ত হলেও এখানে নীচ ভঙ্গ হয়েছে, আর মঙ্গল দ্বারা পীড়িত।
৩, বৃহস্পতি (maturity) নীচস্ত।
৪, লগ্ন পীড়িত, কেতুর দ্বারা। (আমরা লগ্নকে মাথা বলে বিচার করে থাকি)
৫, An afflicted fifth lord. The fifth house can correspond to thinking, logic and wisdom
পঞ্চম ভাব এবং সিংহ রাশি যদি পীড়িত হয় তাহলে মানসিক সমস্যা দেখা যায়।
পারভীন ববী ছোটবেলা থেকে কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন না, বয়সের একটা সময় এসে ওনার মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়, সালটা ছিল 1979 জন্মকালীন নীচস্ত বৃহস্পতির দশা এবং কেতুর অন্তর্দশায়।
১৯৭৯ সালে কেতুর অবস্থান ছিল কুম্ভ রাশিতে লগ্ন থেকে ৫ম ভাবে, যার ফলে পারভীনের লজিক আর চিন্তা ভাবনাকে নষ্ট করেছিল।
রাহু আর শনির অবস্থান ছিল সিংহ রাশিতে।
natural zodiac এর ৫ম ঘর শনি আর রাহু দ্বারা পীড়িত হয়ে সেই একই সমস্যার মুখ মুখী হতে হয়েছিল, জন্ম কালীন চন্দ্র, বৃহস্পতি আর বুধ পীড়িত হয়ে পারভীনের মন মানসিকতা আর মাথার সমস্যা ছিল ছাই চাপা আগুনের মতন কিন্তু নীচস্ত বৃহস্পতি আর লগ্নে কেতু দশায় এবং transit এর কেতু, রাহু, শনি ৫ম ভাবকে অতিরিক্ত পীড়িত করে সেই ছাই সরিয়ে আগুনকে বেড়িয়ে আস্তে সাহায্য করেছিল।
অবশেষে পারভীনকে পাগল হতে হয় এবং আজকের দিনে ২০ জানুয়ারী ২০০৫ সালে চিরকালের জন্য আমাদের ছেড়ে চলে যান।