সর্বনাশ করেছে, আপনার জীবন ফিনিশ—-
চুল উস্ক খুস্ক করে পাড়ার দোকানে চা খাচ্ছে আর আকাশের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
কি দেখছো আকাশের দিকে নান্টু দা?
নান্টু দা:
আমার আর কিছু হবে না সম্রাট, সব ফিনিশ।
কাল তোর বৌদি আমাকে তার গুরুদেবের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো, কুষ্টি দেখে বললো শ্রাপিত যোগ আছে,
আমার নাকি কিছু হবার নয়।
কিন্তু নান্টু দা তোমার তো সব কিছুই আছে, একটা বাড়ি, সুন্দরী বউ, সরকারি চাকরি করো তুমি, মেয়ে ভালো পড়াশোনা করছে, কাল বিকেলেও তোমাকে পাড়াতে বসে তাস খেলতে দেখলাম, হটাৎ করে ফিনিশ হলো কি করে?
সম্রাট তুই কিছু বুঝিস না, গুরুদেব যখন বলেছেন আমার কিছু হবে না, তার মানে আমার কিছুই হবে না।
তুমি আবার নতুন করে কি হবে ভাবছিলে,
আইজ্যাক নিউটন হবার ইচ্ছে ছিলো নাকি?
এমন কথা অনেক মানুষকেই শুনতে হয়েছে, যখন দেখেছে জাতচক্রে শনি রাহুর শ্রাপিত যোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মনে হয় যেন পাকিস্তান আর চীন দুদিক থেকে এট্যাক করেছে, পালানোর পথ নেই। সারা শরীরে অসংখ্য মাদুলী, কবচ, গাছের শিকড় আর পাথর পড়ার পরেও মানুষ ভয় ভয় এগিয়ে চলে জীবন যুধ্যে, এই বুঝি শনি আর আর রাহু গিলে খেলো। অফিসে মালিকের চোখ রাঙানো বাড়িতে বউয়ের দাপট আর মাথার ওপরে রয়েছে শ্রাপিত যোগ। বাঁচবেন কি করে? পারলে কিলো কিলো রেল লাইনের পাথর গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় পাড়ার নান্টু দা।
পাঠকগনদের ছোট একটা ইনফরমেশন দেবার দরকার আছে, শনি আর রাহু যখন একটি ঘরে অবস্থান করে তখন শ্রাপিত যোগ বলা হয়।
এবার জানার দরকার আছে কবে কবে এই শ্রাপিত যোগ সৃষ্টি হয়। প্রতি ১০ বছর অন্তর অন্তর এইযোগ রাশি চক্রের কোনো একটা ঘরে সৃষ্টি হয়, থাকে মোটামোটি ৮মাসের আসে পাশে, একমাত্র ২৩/১২/২০১২ সকাল ৮ টায় তুলা রাশিতে যেই শ্রাপিত যোগ সৃষ্টি হয়েছিলো সেটা ছিল সম্পূর্ণ দের বছর।
★১২/০১/১৯৬৮ সকাল ৬:৪০ থেকে ১৭/০৬/১৯৬৮ সকাল ৭:১৬ মিনিট পর্যন্ত মীন রাশিতে শনি রাহুর যোগ সৃষ্টি হয়। (৫মাস)
২৮/০৯/১৯৬৮ সালের সকাল ৯:১৫মিনিট থেকে ০৭/০৩/১৯৬৯ পর্যন্ত এই যোগ থাকে। (৫মাস)
★ ১৭/০৩/১৯৮০ সকাল ৪:৩০ থেকে ৬/৬/১৯৮০ সকাল ৫:২০ পর্যন্ত। (৩মাস) সিংহ রাশিতে।
১৮/১১/১৯৭৮ সকাল ২:৫৭ মিনিট থেকে ৪/১১/১৯৭৯ ১:৩০ am পর্যন্ত। (১২মাস)
★ ২১/০৩/১৯৯০ সকাল ০২:০৬ মিনিটে শনি মকরে প্রবেশ করে শ্রাপিত যোগ সৃষ্টি করে, এবং ২৬/০৬/১৯৯০ রাত ২০:৩০ মিনিটে যোগ ভঙ্গ হয়, (৩মাস)
আবার ১৫/১২/১৯৯০ সকাল ০১:২০ মিনিট থেকে ১৩/০৪/১৯৯১ সকাল ২:৪০ মিনিট পর্যন্ত (৪মাস)।
★ ১৬/০২/২০০২ রাত ২৩:৪০ থেকে ২৩/০৭/২০০২ সকাল ০৪:২০ পর্যন্ত বৃষ রাশিতে(৫মাস)।
০৮/০১/২০০৩ দুপুর ১৩:৪৯ থেকে ৭/০৪/২০০৩ সন্ধ্যা ২০:১৩ মিনিট পর্যন্ত শ্রাপিত যোগ থাকে( ৩মাস)।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে ৮/১০ মাস পর্যন্ত প্রতি ১০ বছর অন্তর এই দশা আসে, আমরা যদি ৬ মাসের পরিসংখ্যান করি কতজন মানুষের জন্য হয় প্রতি ১০ বছর অন্তর তাহলে দেখে নেওয়া যাক। পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে ২জন মানুষ জন্মায়, মিনিটে ১০৫জন, ঘন্টায় ৬,৩১৬ জন, দিনে ১৫১,৬০০ জন, মাসে ৪,৫৪৮,০০০ জন আর ৬মাসে ২৭,২৮৮,০০০ জন মানুষ জন্মায়, তার মানে ২কোটি ৭২লক্ষ মানুষ এই শ্রাপিত যোগের মধ্যে পড়েন।
মুন্ডেন অস্ট্রোলজি বলছে শনি রাহু একত্রে অবস্থান সমাজের বা রাষ্ট্রের প্রতি ক্ষতিকারক।
১০/০২/২০১৩ সালে এই যোগের সময় এলাহাবাদ স্টেশনে কুম্ভ মেলায় যেতে গিয়ে ৩৬ জন মারা যায় এটা যদি শ্রাপিত যোগের জন্য হয় তাহলে ২৫/০২/২০১৩ সালে ২৫ লক্ষ মানুষ কুম্ভ মেলায় পবিত্র স্নান করলো কিভাবে?
১৪ থেকে ২১/০২/২০১৩ সালে south asina game হয়েছিলো দিল্লিতে, সারা পৃথিবীর মানুষ দেখেছিলো খেলা এটা যদি ভালো কাজ হয় তাহলে ঐ গেমস এ ৫০ কোটি টাকার স্ক্যাম হয়েছিলো তাহলে এটাকে কি বলবেন?
২১/০২/২০১৩ সালে 1dilsnkhnagarএ বোমা বিস্ফোরণে ১৭জন মারা গিয়েছিলো আর ১১৯ জন অসুস্থ হয়েছিলো, এটা মুন্ডেন অস্ট্রোলজি দিয়ে যদি নেগেটিভ বিচার করি শ্রাপিত যোগের জন্য হয়েছিলো তাহলে ২০/০৩/২০১৩ সালে BRAHMOS MISSILE বঙ্গোপসাগরে পরীক্ষা করা হয়েছিলো যা ভারতের সেনার নতুন পালক বলে গণ্য করা হয়ে থাকে।
শ্রাপিত যোগ মানুষের জাতচক্রে যেখানে অবস্থা করবে সেই জায়গার কার্যকারিতা ধ্বংস করবে এমনটাই সোনা যায়, যেমন ধরুন—-
লগ্নে অবস্থান করলে শরীর ভীষণ খারাপ হবে, জাতক সারাজীবন অসুস্থ্য হয়ে থাকবে, কিন্তু শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর কুম্ভ লগ্ন আর লগ্নে শনি আর রাহুর অবস্থান, ওনার মতন সাহসী মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়, শ্রীকান্ত পড়লেই বোঝা যায়, রাজলক্ষী পড়লে জানতে পারবেন যখন শরৎ বাবু কলেরা রুগীদের সেবার কাজে ব্রতী হয়েছিলেন তখন গ্রামের পর গ্রাম রোগে মোড়ে গিয়েছিলেন, ওনার কলেরা রোগ হয়ে গেলো, রাজলক্ষী জানতে পেরে ওনাকে নিয়ে গিয়ে বাঁচিয়ে তোলেন, আশাকরি সেই সময় ফ্লাইটে করে রাজলক্ষী আসেননি, উনি এসেছিলেন গরুর গাড়ি চড়েই, কতটা সময় গেলেছিলো সেই সময় ওনার কাছে পৌঁছাতে সেটা পরিমাপ করা যায়, জীবনী শক্তি বেশি না থাকলে ওই ভাবে বেঁচে উঠতে পারে না কোনো মানুষ।
শোনা যায় ৪ভাবে শনি আর রাহু থাকলে পড়াশোনার বারোটা বেজে যায়, হায়রে আমার পড়া কপাল খুঁজতে খুঁজতে বিদ্যাসাগরের কুষ্টি হাতে পেলাম ওনার ৪য় ভাবে শ্রাপিত যোগ, যাকে সারা পৃথিবীতে বিদ্যার সাগর বলা হয় তার পড়াশোনার ক্ষতি হবে?
পি, চিদামরাম এর নাম শোনেননি এমন কেউ নেই, ওনার ৪য় ভাবে শ্রাপিত যোগ, হার্ভাট বিশ্ববিদ্যালয়ের এম,বি,এ এর ছাত্র, তাছাড়া ওনার পড়াশোনার ফিরিস্তি খুললে শেষ হবে না।
অনেকেই বলে থাকেন ১১ভাবে শ্রাপিত যোগ থাকলে জাতক যতই করুক গরিব থেকেই যাবে।
শ্রী রাবি শঙ্কর
শর্মিলা ঠাকুর
রানী ভিক্টোরিয়া সত্যি বিরাট গরীব তাই না?
এদের সকলের ১১ভাবে শ্রাপিত যোগ আছে।
পাঠকগণ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে শনি রাহু একসাথে কোনো ভাবে বসে থাকলে সেই ভাবকে একেবারে খারাপ করেনা, অনেক সময় দেখা গেছে গোচরে যখন সেই ভাবে শনি বা রাহু ফিরে আসে আর শনি বা রাহুর দশা অতিবাহিত হয় তখন জাতকের জীবনে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
অশোক কুমার
ফকির মোহন সেনাপতি
ফ্লোরেন্স নইটাঙলে
মায়াবতী
মুরলী মনোহর জোশী
সি,ভি রামান
রাজেন্দ্র কুমার
অস্কার চাইল্ড
ঋষিকেশ মুখার্জি
মহেশ যোগী
মাধব রাও সিন্ধিয়া
এনাদের সকলের জাতচক্রে শনি রাহুর যোগ ছিল বা আছে। আসলে আমাদের জীবনের কর্মটাই সব থেকে বড় ব্যাপার, আপনি যেমন সমাজকে আয়না দেখাবেন ঠিক তেমন ভাবেই দেখবেন।
স্বামী বিবেকানন্দ বকেছিলেন কর্মই ধর্ম।
সর্ব শেষে বলে রাখি শিক্ষিত জ্যোতিষ দের কাছে যাবেন, যারা জ্যোতিষ নিয়ে ঠিক ভাবে পড়াশোনা করেছেন, অযথা ভুল বুঝে আপনার সুন্দর জীবন চিন্তায় ভরিয়ে তুলবেন না।
সম্রাট বোস
7890023700